What is Meteoroid উল্কা কি ? কুরআনের বিশ্লেষণ জেনে নিন

উল্কা (Meteoroid) কি?? সাধারণত সাধারণ ভাবে সাধারণ মানুষরা 'উল্কাপাত'কে 'তারা খসা' বলেন কিন্তু আসল সত্য কি?? আসল তথ্য হল- 'তারা খসা' বলে কিছু হয় না, তারা বা নক্ষত্র কখনও খসে পড়ে না!!
তাহলে আসল সত্য এবং প্রমাণিত তথ্য কি?? আসল সত্য তথা আসল তথ্য হল- উল্কা ধূমকেতু (Comet) ও গ্ৰহাণু (Asteroid) ছাড়া কিছুই নয়!! তাহলে এখন প্রশ্ন হবে- ধূমকেতু ও গ্ৰহাণু কাকে বলে এবং তাদের পার্থক্য কি??
ধূমকেতু সৃষ্টি হয়েছে- Gas, সৌরজগতের ধূলিকণা ও বরফে মিশ্রণ থেকে। ধূমকেতু গ্ৰহদের মতো করেই সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। ধূমকেতু আকারে কয়েক Kilometers পর্যন্ত হতে পারে। ধূমকেতু আকারে ছোট এবং ভর কম হওয়াতে বিভিন্ন গ্ৰহ ও উপগ্ৰহদের বলয়ে ঢুকে পড়ে। ধূমকেতু যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, তখন বায়ুমণ্ডলের অন্যতম স্তর Mesosphere স্পষ্ট করা মাত্রই তা জ্বলে ওঠে এবং আমাদের চোখে পড়ে। তখন আমরা তাকে জলন্ত দেখি, তাই ভাবি- এটা 'তারা খসা'।
গ্ৰহাণু অর্থ হল- গ্ৰহ + অনু। এক কথায় ছোট গ্ৰহ কিন্তু তাদের গ্ৰহ বলে মনে হয় না। তাদের সৃষ্টি বিষয়ক একাধিক তত্ত্ব প্রচলিত আছে- 1) সৌরজগতে আরও গ্ৰহ তৈরী হওয়ার কথা ছিল কিন্তু পর্যাপ্ত উপাদান না থাকায় তা আর পূর্ণতা পায় নি, তা রয়ে গেছে ছোট্ট ছোট্ট টুকরা হয়ে, আর যেহেতু আকারে ছোট, তাই আকৃতিও গ্ৰহের মতো গোলকার হয় নি!! আর 2) হয়ত সৌরজগতের কোনও গ্ৰহের সঙ্গে কোনও গ্ৰহের সংঘর্ষ হয়, ফলত তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গ্ৰহাণুতে পরিণত হয় এবং এই উদাহরণ রয়েছে, যেমন- Theia নামক গ্ৰহের সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ এবং চাঁদের উৎপত্তি!! তাই না??
আমরা বলতে পারি যে, এই গ্ৰহাণু হতে পারে পৃথিবী বাসির জন্য মরণাস্ত্র। কেননা, প্রায় 60 million বছর বা 6 কোটি বছর পূর্বে 10/10 Kilometers এর এক গ্ৰহাণুর আঘাতে পৃথিবী হতে চিরতরে মুছে গিয়েছিল Dinosaur দের সমস্ত প্রজাতি সহ আরও কোটি-কোটি প্রজাতির প্রাণ!! যাইহোক, গ্ৰহাণু আকারে যখন ছোট্ট হয়, তখন বায়ুমণ্ডলের Mesosphere তাকে জ্বালিয়ে দেয়, অনেক সময় আবার তা Blast হয়ে আরও ছোট্ট ছোট্ট টুকরায় পরিণত হয়ে যায়!!
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় যে গ্ৰহাণুটির খোঁজ পাওয়া গেছে, তার আকার 945 Kilometers ব্যাসের। আবার কিছু কিছু গ্ৰহাণুর উপগ্ৰহাণু'ও থাকে, যদিও তা ক্ষণিক সময়ের জন্য!! আবার এখন কিছু কিছু গবেষণা বলছে যে, গ্ৰহাণুতে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ আছে। এখন যদি আপনি কোরান, গ্ৰহাণু, বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে নিচের Link এ Click করতে পারেন---
https://m.facebook.com/
যাইহোক, যা বলতে চাইছিলাম, তা হল- উল্কা আর অন্য কিছু নয়, তা ধূমকেতু ও গ্ৰহাণু। আর 'তারা খাসা' বা নক্ষত্র তো মোটেও নয় এবং এটা কোনও Theory নয় বরং প্রমাণিত সত্য অর্থাৎ আমরা যাকে Fact বলে থাকি!!
এখন ইসলাম বিদ্বেষীদের দাবি হল- কোরানে এ বিষয়ে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। কেননা পবিত্র কোরানে বলা হয়েছে-
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ ۖ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
প্রচলিত অনুবাদ হয় এমন-"আমি তোমাদের কাছের আকাশকে প্রদীপ/ নক্ষত্র সমূহ দ্বারা সুসজ্জিত করেছি, আর সেগুলোকে শয়তানদের মেরে তাড়ানোর উপকরণ বানিয়ে দিয়েছি। তাদের জন্য আমি প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি"(67:5)। আর একই ধরণের আয়াত রয়েছে- إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ
প্রচলিত অনুবাদ হয় এমন-"তবুও যদি তাদের কেউ তার মধ্য থেকে কিছু হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়, তাহলে একটি উল্কা পিন্ড তার পেছনে ধাওয়া করে"(37:10)।
এখান থেকে ইসলাম বিদ্বেষীদের দাবি হল- এখানে নক্ষত্রকে উল্কাপিন্ড বলা হচ্ছে এবং এটা মারাত্মক বৈজ্ঞানিক ভুল!! তারা আরও বলেন- যদি এখানে তারা খসাকে উল্কা বলা হত, তাহলে সেটা হত প্রচলিত তত্ত্ব এবং ছোট বৈজ্ঞানিক ভুল কিন্তু এখানে নক্ষত্রকেই উল্কাপিন্ড বলা হচ্ছে, তাই এটা মারাত্মক বৈজ্ঞানিক ভুল!! তারা আরও বলেন- নক্ষত্রকে উল্কা পিন্ড বলা হচ্ছে, তারমানে কোরান বলছে যে, নক্ষত্রের আকার মাত্র কয়েক Inches থেকে কয়েক Kilometers, যা আরও একটি মারাত্মক বৈজ্ঞানিক ভুল!!
পাঠক, তাহলে এখন কি হবে?? তাহলে কি কোরানে বৈজ্ঞানিক ভুল আছে?? তাহলে এখন কি হবে?? কিছুই হবে না, চিন্তা করছেন কেন?? হোসেন কুরানী কি মারা গেছে?? তাহলে চিন্তা করার মোটেও দরকার নেই, কম পক্ষে 121 বছর 3 মাস!! যাইহোক, এখন কি আপনি কুরানী বিশ্লেষণ চান?? তাহলে এই কুরানী বিশ্লেষণের যাত্রায় আমাদের সঙ্গে থাকুন। আমরা কি এখন কি করব জানেন?? Special কিছুই নয়, শুধুমাত্র সঠিক অনুবাদ পেশ করব, তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে, কোরান অবৈজ্ঞানিক নয়ই বরং সর্বদা আধুনিক বিজ্ঞানের পূর্বসূরি!! কিভাবে?? দেখুন-
প্রচলিত অনুবাদে بِمَصَابِيحَ (বিমাসাবীহা) শব্দের অনু বাদ করা হয়- প্রদীপ সমূহ বা নক্ষত্র সমূহ। যা সঠিক নয়। এ বিষয়ে পরে আলোচনা করব যে, কেন উক্ত অনুবাদ সঠিক নয়!! প্রথমে বিশ্লেষণ করি, তারপর আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে, কেন উক্ত অনুবাদ সঠিক নয়!! আরবি بِمَصَابِيحَ (বিমাসাবীহা) শব্দটি আরবি مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের বহুবচন। তাহলে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ কি হতে পারে?? উত্তর সহজ- একটি প্রদীপ বা একটি নক্ষত্র। তাই না??
এখন প্রশ্ন হবে- তাহলে কি مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ- প্রদীপ নয় এবং بِمَصَابِيحَ (বিমাসাবীহা) শব্দের অর্থ- প্রদীপ সমূহ বা নক্ষত্র সমূহ নয়?? না, কখনও না!! আরবি مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ নক্ষত্র কখনও নয়, নক্ষত্রের আরবি হল- نجم (নাজম) এবং এই নামে পবিত্র কোরানে একটি সূরাও আছে, যা পবিত্র কোরানের 53 নং সূরা। আপনি চাইলে এই সূরার প্রথম আয়াতটি আপনাকে দেখাতে পারি, তাহলে হয়ত আমার উপর বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে, দেখুন- وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَىٰ
অনুবাদ হবে এমন-"এবং শপথ সেই নক্ষত্রের, যখন তা [Black hole এ পরিণত হওয়ার কারণে] অদৃশ্য হয়ে যায়"(53:1)।
আর যখন একবচনে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ 'নক্ষত্র' নয়, তখন তার বহুবচনে بِمَصَابِيحَ (বিমাসাবীহা) শব্দের অর্থ 'নক্ষত্র সমূহ' হয় কিভাবে?? তাই নয় কি?? এখন পড়লে রইল কথা, مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ 'প্রদীপ' কি না!! এ প্রশ্নের উত্তর হল- না, শুধুমাত্র প্রদীপ নয়। তবে, দূরবর্তী অর্থ হতে পারে- প্রদীপ। কিভাবে?? দেখবেন?? তার জন্য আপনাকে 2 টি আয়াত দেখতে হবে। রাজি তো?? দেখুন-
আরবিতে প্রদীপকে কি বলা হয়?? এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে 25:61 তে। দেখবেন সেখানে কি বলা আছে?? বলা হচ্ছে-
تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُنِيرًا
অনুবাদ হবে এমন-"ধন্য তিনি, যিনি মহাশূন্যে Galaxy সমূহ সৃষ্টি করেছেন এবং তার মাঝে প্রদীপ ও প্রদীপের আলোয় আলোকিত চাঁদ"(25:61)। তাহলে এখানে প্রদীপের আরবি কি পেলেন?? উত্তর সহজ- তা আরবি سِرَاجًا (সিরাজ)। এ তো একটি আয়াত, আরও একটি আয়াত দেখুন- وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُنِيرًا অনুবাদ হবে এমন-"আল্লাহর অনুমতিক্রমে তার দিকে আহ্বান কারি রুপে, প্রদীপ ও প্রদীপের আলোর প্রতিফলনকারি রুপে"(33:46)। তারমানে 33:46 আয়াতে আল্লাহ নবী (স)- কে পৃথিবীতে পাঠানোর উদেশ্য সম্পর্কে বলেছেন। সে যাইহোক, এখানে প্রদীপের আরবি কি পেলেন?? তা কি سِرَاجًا (সিরাজ) নয়??
এবার বলুন- তাহলে প্রদীপ শব্দের আরবি যদি سِرَاجًا (সিরাজ) হয়ে থাকে, তাহলে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ প্রদীপ কিভাবে হয়?? তাহলে কি مِصْبَاحٌ শব্দের অর্থ 'প্রদীপ' এবং بِمَصَابِيحَ শব্দের অর্থ 'প্রদীপ সমূহ' করা ভুল হচ্ছে না??
এখন প্রশ্ন হবে- তাহলে مِصْبَاحٌ শব্দের অর্থ কি হবে?? আচ্ছা পাঠক, আপনার কি মনে হয়?? مِصْبَاحٌ শব্দের অর্থ কি হতে পারে?? এ প্রশ্নের ততক্ষণ ভাবুন, এখন আমার চোখে ঘুম এসে গেছে এবং এখন Indian time এ রাত 3:46 ও 15.09.2020 তারিখ। আগামীকাল সকালে বা আগামীকাল আবার রাত 2 টো থেকে লেখা শুরু করব- ইনশাআল্লাহ।
জানেন কি, আরবি مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দটি কোন শব্দ থেকে এসেছে?? শুনলে অবাক হবেন, সেই শব্দটি হল- صبح (সুবহা), যার অর্থ হল- সকাল, ভোর, আলোর প্রকাশ, আলো চলে আসা ইত্যাদি। দাঁড়ান, আমি চেষ্টা করি, যেন আরও একটু সহজ করে আপনাকে বোঝাতে পারি- صبح (সুবহা) > مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) > بِمَصَابِيحَ (বিমাসাবীহা)। এবার বুঝেছেন কি??
এবার বলুন- তাহলে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ কি হতে পারে?? উত্তর সহজ- صبح (সুবহা) শব্দের অর্থ যদি 'আলোর প্রকাশ' হয়, তাহলে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ হবে- যা থেকে আলো আসে!! এই অর্থে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ 'প্রদীপ' হতে পারে কিন্তু যদি বলেন- مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ প্রদীপ, তা হলে তা- ভুল!!
এখন হয়ত কেউ-কেউ বলতে পারেন- আপনি ইচ্ছা মতো মনগড়া অর্থ করছেন!! এ প্রশ্নের উত্তর হল- যদি কোরান থেকে প্রমাণ দিই, তা হলে?? এই নিন আপনার প্রমাণ- وَالصُّبْحِ إِذَا تَنَفَّسَ অনুবাদ হবে এমন-"এবং শপথ ঐ ভোরের/ আলোর প্রকাশের, যখন তা শ্বাস প্রক্রিয়া শুরু করে"(81:18)। বলুন- উক্ত আয়াতে صبح শব্দের কি অর্থ পেলেন??
এখন অনেকেই বলতে পারেন- আলো তো নক্ষত্র থেকেও আসে, তাহলে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ 'নক্ষত্র' ধরব না কেন?? উত্তর সহজ- আলো তো শুধু মাত্র নক্ষত্র থেকে আসে না, চাঁদ থেকেও তো আসে, তা হলে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ 'উপগ্ৰহ' ধরেন না কেন?? আলো তো গ্ৰহ থেকেও আসে, তাহলে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ 'গ্ৰহ' ধরেন না কেন?? আলো তো ধূমকেতু এবং গ্ৰহাণু থেকেও আসে, তাহলে مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ 'ধূমকেতু এবং গ্ৰহাণু' ধরেন না কেন??
এখন প্রশ্ন হতে পারে- مِصْبَاحٌ (মিসবাহুন) শব্দের অর্থ ধূমকেতু এবং গ্ৰহাণু ধরার যৌক্তিকতা কোথাও?? কি যে বলেন!! যৌক্তিকতা কোথাও মানে, যৌক্তিকতা তো ঐ আয়াতেই আছে, শুধু আপনি দেখতে পান নি, চলুন আপনাকে দেখাই-
আয়াতে ব্যবহৃত আরবি শব্দ হল- رُجُومًا (রুজুমান), যা আরবি رجم (রাজাম) শব্দ থেকে সেছে। যার অর্থ হল- পাথর ছোঁড়া, পাথর ছুঁড়ে মারা/ হত্যা করা ইত্যাদি। বিশ্বাস হচ্ছে না?? নিচের হাদীসটি দেখুন-
قَالَ ابْنُ شِهَابٍ : فَأَخْبَرَنِي مَنْ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : فَكُنْتُ فِيمَنْ رَجَمَهُ ، فَرَجَمْنَاهُ بِالْمُصَلَّى ، فَلَمَّا أَذْلَقَتْهُ الْحِجَارَةُ هَرَبَ ، فَأَدْرَكْنَاهُ بِالْحَرَّةِ ، فَرَجَمْنَاهُ
অনুবাদ হবে এমন-"ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- আমাকে এমন এক ব্যক্তি বর্ণনা করেছেন, যিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা)- কে বলতে শুনেছেন যে, তাকে পাথর মেরে হত্যাকারীদের [রজমকারিদের] মধ্যে আমি একজন ছিলাম। আমরা তাকে জানাযা আদায়ের স্থানে রজম করি। পাথরের আঘাত যখন তার অসহ্য হচ্ছিল, তখন সে পালাতে লাগল। আমরা হাররা নামক স্থানে তাকে ধরলাম। আর সেখানে তাকে পাথর মেরে হত্যা [রজম] করলাম"(বুখারী, হাদীস 6816)।
সুধী পাঠক, তাহলে رُجُومًا (রুজুমান) শব্দের অর্থ কি হতে পারে বলে মনে হয়?? তার অর্থ কি পাথর ছোঁড়া নয়?? তাহলে এখানে 'পাথর' বলতে কাকে বোঝানো হচ্ছে?? তা কি ধূমকেতু ও গ্ৰহাণু নয়??
সুধী পাঠক, এবার মনে হয় 67:5 আয়াতের সঠিক অনুবাদ পেশ করার সময় খুব কাছে চলে এসেছে, তাই লক্ষ্য করুন-
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ ۖ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
সঠিক অনুবাদ হবে এমন-"আমরা পৃথিবীর কাছের আকাশ [সৌরজগতৎ] কে সুসজ্জিত করেছি ধূমকেতু ও গ্ৰহাণু নামক পাথর দ্বারা, আর সেগুলোকে শয়তান দের মেরে তাড়ানোর উপকরণ [উল্কা] বানিয়ে দিয়েছি। আর আমরা তাদের জন্য রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি"(67:5, 41:12)।
পাঠক, কোরানে কোনও ভুল পেলেন?? না কি আজ থেকে 1500 বছর আগে আধুনিক বিজ্ঞানকে উল্কার উৎপত্তি সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়েছে?? আর এই একই আয়াত রয়েছে 41:12 তে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আপনাকে যেতে হবে 37:6-10 তে। আমরা উপরে ইসলাম বিদ্বেষীদের মতো করে 37:10 কে তুলে এনেছিলাম কিন্তু এখন আমরা 37:6-10 নিয়ে আসতে চাই, তাহলে আপনি বুঝবেন- কোরান শুধুমাত্র বিজ্ঞান সম্মতই নয় বরং আধুনিক বিজ্ঞানের দিশারী!! সুতরাং দেখুন- إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ অনুবাদ হবে এমন-"নিশ্চয় আমরা পৃথিবীর আকাশ [সৌরজগৎ] কে 'ধূমকেতু এবং গ্ৰহাণু সমূহ' দ্বারা সুসজ্জিত করেছি, যা চকচক করে"(37:6)।
বেশিরভাগ অনুবাদে উপরিউক্ত আয়াতে ব্যবহৃত আরবি كَوَاكِبِ (কাওয়াকিব) শব্দের ঢালাও ভাবে অনু বাদ করে দেওয়া হয়- নক্ষত্র, অথচ আমরা অবগত আছি যে, নক্ষত্রের আরবি হল- نجم (নাজম)। যা 37:6 এ নেই!!
অন্যদিকে আরবি كَوَاكِبِ (কাওয়াকিব) শব্দটি আরবি كوكب (কাওকাব) শব্দের বহুবচন। যার অর্থ- গ্ৰহ, উপ গ্ৰহ, গ্ৰহাণু, ধুমকেতু ইত্যাদি। যা আরবির মূল كوك শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ- ঝুলন্ত কোনও কিছু!!
যাইহোক, এবার আমরা পরবর্তী আয়াত গুলো দেখে নিতে চাই। সুতরাং দেখুন- وَحِفْظًا مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ مَارِدٍ
অনুবাদ হবে এমন-"এবং তাকে [আকাশকে] রক্ষা করি নিকৃষ্টতম শয়তান থেকে"(37:7)। পরবর্তী আয়াতগুলো দেখুন- لَا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِنْ كُلِّ جَانِبٍ
অনুবাদ হবে এমন-"যাতে তারা শুনতে না পায় ঊর্ধ্ব জগতের কোনও কথা"(37:8)। তারপর আরও বলা হয়েছে- دُحُورًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ সঠিক অনুবাদ হবে এমন-"সবদিক থেকে তাদের তাড়ানোর জন্য রয়েছে অবিরাম শাস্তি"(37:9)। আর শেষে উল্কা কি, তা বলা হচ্ছে- إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ অনুবাদ হবে এমন-"এছাড়া যদি তারা কোনও খবর শুনেও নেয়, তখনই উল্কা তার পিছনে ধাওয়া করে"(37:10)।
এবার একটা ছোট্ট প্রশ্ন- কোরানের উল্কা তত্ত্বে কি কোনও ভুল আছে?? না কি বর্তমান বিজ্ঞানের 1500 চেয়ে বছর আগে 'পরিপূর্ণ ও বিজ্ঞান সম্মত' তথ্য প্রদান করেছে?? বুকে হাত রেখে উত্তর দিন!!
সুধী পাঠক, এবার আমরা 15:16-18 টি বিশ্লেষণ করব। অনুবাদকরা 15:16-18 টি এমন ভাবে অনুবাদ করেন যে, যেন মনে হয়- 67:5, 37:6-10 ও 15:16-18 আয়াত গুলো একই অথচ 15:16-18 আয়াত গুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন। আবার 15:14-15 এর সঙ্গে যোগ আছে 15:16 এর। আর 15:16 টি 15:14-15 এর সঙ্গে সম্পর্ক রেখে সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে মহাবিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে কথা বলছে এবং 15:17-18 ভিন্ন কোনও Galaxy'র পৃথিবীর মতো কোনও গ্ৰহের জ্বীন তথা শয়তান সম্পর্কে কথা বলছে, যা 67:5, 41:12, 37:10 এর মতো। চলুন এবার আমরা 15:14-15, তারপর 15:16, তারপর 15:17-18 টি দেখব। বলে রাখতে চাই- আমরা আর প্রচলিত অনুবাদ পেশ করব না, সরাসরি সঠিক অনুবাদ পেশ করব- ইনশাআল্লাহ। তাহলে চলুন, নিয়ে যাই এক সুন্দর যাত্রায়- وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَابًا مِنَ السَّمَاءِ فَظَلُّوا فِيهِ يَعْرُجُونَ
অনুবাদ হবে এমন-"আর যদি আমরা তাদের আকাশে [মহাশূন্যে] ভ্রমণের ব্যাবস্থা করে দিতাম এবং তারা মহা শূন্যে ভ্রমণও করত"(15:14)। আর এর পরের আয়াত বলছে- لَقَالُوا إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌ مَسْحُورُونَ
অনুবাদ হবে এমন-"তবুও তারা বলত যে, আমাদের দৃষ্টি গুলোকে সম্মোহিত করা হয়েছে বরং আমরা সবাই যাদুগ্ৰস্থ"(15:15)। এর পরের আয়াতটি 15:15 এর অংশ- وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَزَيَّنَّاهَا لِلنَّاظِرِينَ অনু বাদ হবে এমন-"এবং নিশ্চয় আমরা মহাশূন্যে Galaxy সমূহ সৃষ্টি করেছি এবং তা দর্শকদের জন্য মনোমুগ্ধকর করেছি"(15:16)।
15:16 তে কথা বলা হচ্ছে- 25:61 ও 85:1 এর মতো মহাশূন্যে Galaxy সৃষ্টির। এখানে ব্যবহৃত আরবি শব্দ হল- بروج (বুরুজ), যার অর্থ 'নক্ষত্রের ঘর সমূহ' এবং এখানে بروج (বুরুজ) শব্দটি বহুবচন, তাই অনুবাদ হবে- 'নক্ষত্রের ঘর সমূহ' কিন্তু নক্ষত্রদের ঘর সমূহ কাকে বলে?? সহজ উত্তর- Galaxy সমূহকে। আর এই بروج শব্দের মূল হল- بُرْج (বুর'জ)। আর এই بُرْجَان (বুরজান) এর বহুবচন হল- بروج (বুরুজ)।
সাধারণ ভাবে بُرْج (বুর'জ) শব্দের অর্থ হল- প্রাচীর ঘেরা এলাকা বা দুর্গ কিন্তু যখন মহাকাশের ক্ষেত্রে বলা হবে, তখন তা নিদিষ্ট অঞ্চল ভিত্তিক নক্ষত্র সমূহ। আর যখন তা বহুবচনে بروج (বুরুজ) হবে, তার অর্থ- অঞ্চল ভিত্তিক নক্ষত্রদের এলাকা সমূহ' অর্থাৎ Galaxy সমূহ। আর জানিয়ে রাখি- মুনির উদ্দিন আহমাদ সাহেব তার কোরানের অভিধানে بروج (বুরুজ) অর্থ করেছেন- নক্ষত্রের ঘর সমূহ, যা বিজ্ঞানের ভাষায়- Galaxy সমূহ। কিন্তু আমাদের সম্মানিত অনুবাদকগণ بروج (বুরুজ) অর্থ করছেন- নক্ষত্র, কেউ কেউ করছেন- দুর্গ। এটা কতটা যুক্তিযুক্ত, তার বিচার পাঠকদের উপর ছেড়ে দিলাম!!
যদিও 4:78 তে بروج অর্থ 'দুর্গ সমূহ'। তাই বলে কি একই শব্দের একাধিক ব্যবহার হয় না?? যেমন- পড়া মানে- বই পড়া, পড়া মানে- ছাদ/ গাছ থেকে পড়া, পড়া মানে- পড়ে থাকা কোনও কিছু অর্থাৎ পড়া বস্তু, পড়া মানে- গলা পড়া অর্থাৎ গলা খারাপ হওয়া ইত্যাদি কিন্তু দুঃখজনক কথা হল- সম্মানিত অনুবাদকগণ মহাশূন্যে দুর্গ দেখতে পান!!
যাইহোক, 15:17 ও 18 তে সেই Galaxy সমূহের মধ্যে অন্যান্য জীবনময় গ্ৰহ সম্পর্কে বলা হচ্ছে, আমাদের পৃথিবী এবং সৌরজগৎ সম্পর্কে নয়। কারণ 15:16 তে Galaxy সমূহ সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে, তাই এখন দেখুন- وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَزَيَّنَّاهَا لِلنَّاظِرِينَ অনু বাদ হবে এমন-"এবং নিশ্চয় আমরা মহাশূন্যে Galaxy সমূহ সৃষ্টি করেছি এবং তা দর্শকদের জন্য মনোমুগ্ধকর করেছি"(15:16)। এরপর- وَحَفِظْنَاهَا مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ رَجِيمٍ
অনুবাদ হবে এমন-"এবং আমরা প্রত্যেক অভিশপ্ত শয়তান হতে Galaxy দের জীবনময় গ্ৰহের নক্ষত্র জগৎ গুলোকে সংরক্ষণ করেছি"(15:17)। কিভাবে?? এরপর দেখুন- إِلَّا مَنِ اسْتَرَقَ السَّمْعَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ مُبِينٌ অনুবাদ হবে এমন-"এছাড়া তা হতে কেউ যদি কোনও খবর চুরি করে ফেলে, তখন তার পিছনে ধাওয়া করে উল্কা পিন্ড"(15:18)
সুধী পাঠক, ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি- কোরান উল্কা যে তথ্য প্রদান করেছে 1500 বছর পূর্বে, বিজ্ঞান আজ শুধুমাত্র তার সত্যায়ন করছে মাত্র!! আর এখানেই শেষ নয়, কোরান এও বলছে- শুধুমাত্র সৌরজগতের গ্ৰহ নয় বরং Galaxy দের মধ্যে অন্যান্য নক্ষত্র জগতে জীবন সম্পন্ন গ্ৰহ রয়েছে ও সেখানেই উল্কাপাত হয়!! কেননা প্রাণের অস্তিত্বে উল্কার ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম, যা বিজ্ঞানীগণ বলেছেন। এখানে কোরান সেটাই তুলে ধরেছে, তবে আধুনিক বিজ্ঞানের 1500 বছর পূর্বে!!
সুধী পাঠক, এবার আমরা 72:8-10 টি বিশ্লেষণ করব এবং দেখব- সেখান থেকে ইসলাম বিদ্বেষীদের মতো কোনও প্রশ্ন বের করতে পারি কি না!! তারা যদিও কেউ ওখান থেকে প্রশ্ন বের করে নি, কারণ ওটা তাদের অউকাতের বাইরে!!
যাইহোক, এবার আমরা দেখব এবং সুন্দর-অভূতপূর্ব বিশ্লেষণ করব- ইনশাআল্লাহ। আপনি আমাদের সঙ্গী বা সঙ্গীনি হচ্ছেন তো?? না, না, জীবন সঙ্গিনী হওয়ার কথা বলছি না, বলছি- এই লেখার শেষ পর্যন্ত সঙ্গী বা সঙ্গীনি হতে!! হবেন?? হবেন তো?? তাহলে এবং দেখে নিন- وَأَنَّا لَمَسْنَا السَّمَاءَ فَوَجَدْنَاهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا
অনুবাদ হবে এমন-"আর আমরা আকাশে [সৌরজগত] এ অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছি- তা কঠোর প্রহরী এবং উল্কাপিন্ডের পাথর দ্বারা পূর্ণ"(72:8)। এরপর-
وَأَنَّا كُنَّا। نَقْعُدُ ।مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِ ۖ فَمَنْ يَسْتَمِعِ الْآنَ يَجِدْ لَهُ شِهَابًا رَصَدًا
অনুবাদ হবে এমন-"আর পূর্বে আমরা খবর শোনার জন্য আকাশে [বায়ুমণ্ডলের বাইরে] বসার জায়গা পেয়ে যেতাম কিন্তু এখন কেউ গোপনে শোনার চেষ্টা করলে সে তার নিজের বিরুদ্ধে নিক্ষেপের জন্য উল্কা সমূহ নিয়োজিত পায়"(72:9)। পরের আয়াত-
وَأَنَّا لَا نَدْرِي أَشَرٌّ أُرِيدَ بِمَنْ فِي الْأَرْضِ أَمْ أَرَادَ بِهِمْ رَبُّهُمْ رَشَدًا
অনুবাদ হবে এমন-"তাই আমরা বুঝতে পারছিলাম না যে, পৃথিবীর অধিবাসীদের অকল্যাণ ঘটবে, না তাদের প্রভু তাদের কল্যাণ চান"(72:10)।
পাঠক, 72:8-10 আয়াত গুলো বুঝতে পেরেছেন?? না কি আমি একটু বলব?? আসলে Special কিছুই নয়, যা হয়েছিল, তা হল- 72 নং সূরা জ্বীনের 1-15 পর্যন্ত আয়াতে আল্লাহ জ্বীনেদের নিজেদের মাঝের কথপোকথন তুলে ধরেছেন। তারই অন্যতম 72:8-10 আয়াত। যেখানে জ্বীনেরা বলছেন- আমরা আগে (কোরান নাযিলের কিছু সময়/ দিন) বায়ুমণ্ডলের বাইরে বিভিন্ন ঘাঁটিতে ফেরেস্তাদের কথোপকথন শুনতে বসতাম, মাঝে-মধ্যে অল্প-সল্প কথা-বার্তা শুনেও ফেলতাম কিন্তু এখন আর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে যেতেও পারছি না, গেলেই উল্কাকে পিছনে পাচ্ছি!!
আর এই সব হওয়ার পর 72:10 তে জ্বীনেরা বলা-বলি করছেন যে, আমরা আসলে বুঝতে পারছিলাম না যে, আসলেই এই পৃথিবীতে কি ঘটতে চলেছে!! তা কি পৃথিবীবাসির কল্যাণ, না কি অকল্যাণ!!
এরপর জ্বীনেরা পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল এবং খুঁজতে শুরু করল যে, পৃথিবীতে কি এমন ঘটেছে বা ঘটতে চলেছে, যার জন্য তারা পৃথিবীর বাইরের বিভিন্ন ঘাঁটিতে আর যেতে পারছে না!!
এ জন্য তারা হন্য হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং হঠাৎ তারা শুনতে পেল- এক মনোমুগ্ধকর সুরে অপূর্ব এক বাণীর তিলাওয়াত!! তারা খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারলেন- যার মুখে তারা মনোমুগ্ধকর/ অপূর্ব বাণীর তিলাওয়াত শুনলেন, তার নাম- বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (স)। তখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে ইসলামের সম্পর্কে এভাবে বললেন- إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا সঠিক অনুবাদ হবে এমন-"নিশ্চয় আমরা এক মনোমুগ্ধকর, অপূর্ব এবং বিস্ময়কর 'কোরান' শুনেছি(72:1)।
পরে জ্বীনরা বুঝতে পারলেন যে, এখন বায়ুমণ্ডলের বাইরে যেতে পারছি না, তার কারণ হল- মনোমুগ্ধকর, অপূর্ব এবং বিস্ময়কর 'কোরান'। আসলে কোরান لَوْحٍ مَحْفُوظٍ থেকে সরাসরি নাযিল হত না, প্রথমে তা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরের কোনও এক স্থানে নাযিল করা হয়, তারপর সেখান থেকে 22-23 বছর ধরে নবী (স)- এর উপর নাযিল হতে থাকে। আর এই কোরান যাতে অন্য কারও হস্তাগত না হয়, সেই জন্যই এই সময়ে জ্বীনদের পৃথিবীর বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমি কি বোঝাতে পারলাম??
এখন প্রশ্ন হবে- আপনি যে কাহিনী এতক্ষণ বর্ণনা করলেন, তার দলিল কি?? উত্তরে বলতে পারি- এখন কোরান থেকে নিন, হাদীস পরে দিচ্ছি- ইনশাআল্লাহ। আয়াতটি দেখুন- إِنَّهُمْ عَنِ السَّمْعِ لَمَعْزُولُونَ অনুবাদ হবে এমন-"নিশ্চয় তাদের শুনতে দেওয়াও [বায়ুমণ্ডলের বাইরে] হয় না"(26:112)।
তারপর 72:1-15 পযর্ন্ত জ্বীনদের নিজেদের মধ্যে কথোপকথন আল্লাহ কোরানে তুলে ধরেছেন, আর এ বিষয়ে আরও আয়াত রয়েছে- 46:29-31 এ। সেখানেও জ্বীনদের একদল অপর দলকে ইসলামের দিকে আহ্বান করছেন!!
তো ভাই, এই হল 72:8-10 এর পিছনের কাহিনী। এতক্ষণ আমি 72:8-10 এর ব্যাখ্যায় যা যা বললাম, তা মুসলিম শরীফের কিতাবুস সলাতের 890 নং হাদীসে পাবেন। তবে এত বিশ্লেষণ সহ নয়!!
এখন প্রশ্নটা বের করি, হ্যাঁ?? যদি কেউ শুধুমাত্র 72:8-10 আয়াত গুলো পড়েন, তাহলে মনে হবে- আগে জ্বীনরা বায়ুমণ্ডলের বাইরে খবর শুনতে যেতেন কিন্তু নবী (স)- উপর কোরান নাযিলের আগে থেকে তাদের খবর শোনা বন্ধ করে দেওয়া হয় উল্কাপিন্ডে দ্বারা তাড়িয়ে!!
তাই প্রশ্ন হবে- উল্কাপাত কি নবী (স)- এর যুগ থেকে বা তার কিছু দিন আগে থেকে শুরু হয়?? এ প্রশ্নের উত্তর হল- নবী (স)- উপর কোরান নাযিলের আগে থেকে তাদের খবর শুনতে বাধা দেওয়া হত কিন্তু তা পুরো-পুরি বন্ধ করে দেওয়া হয় নি, যখন বায়ুমণ্ডলের বাইরের কোনও স্থানে لَوْحٍ مَحْفُوظٍ থেকে কোরান নাযিল হয়ে ছিল, তখন থেকে জ্বীনদের বায়ুমণ্ডলের বাইরে যাওয়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেখুন-
وَأَنَّا كُنَّا। نَقْعُدُ ।مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِ ۖ فَمَنْ يَسْتَمِعِ الْآنَ يَجِدْ لَهُ شِهَابًا رَصَدًا
অনুবাদ হবে এমন-"আর পূর্বে আমরা খবর শোনার জন্য আকাশে [বায়ুমণ্ডলের বাইরে] বসার জায়গা পেয়ে যেতাম কিন্তু এখন কেউ গোপনে শোনার চেষ্টা করলে সে তার নিজের বিরুদ্ধে নিক্ষেপের জন্য উল্কা সমূহ নিয়োজিত পায়"(72:9)।
শেষ প্রশ্ন- কবে থেকে উল্কাপাত শুরু হয়?? এ প্রশ্নের উত্তর হল- সৌরজগৎ এবং পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই। বিজ্ঞানীরা বলেন- পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বে উল্কার রয়েছে ভূমিকা প্রধান। আর এ তথ্য পবিত্র কোরানেও এসেছে এক বিজ্ঞান বিশুদ্ধতার সঙ্গে। দেখুন-
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ ۖ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
সঠিক অনুবাদ হবে এমন-"আমরা পৃথিবীর কাছের আকাশ [সৌরজগতৎ] কে সুসজ্জিত করেছি ধূমকেতু ও গ্ৰহাণু নামক পাথর দ্বারা, আর সেগুলোকে শয়তান দের মেরে তাড়ানোর উপকরণ [উল্কা] বানিয়ে দিয়েছি। আর আমরা তাদের জন্য রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি"(67:5, 41:12)।
সুধী পাঠক, এবার আমরা চেষ্টা করব আনুসাঙ্গিক কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার। যাতে আপনি এই লেখাকে হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন। তাহলে কি এগিয়ে যাব?? আপনি শেষ পর্যন্ত থাকবেন তো?? না, না, ভয়ের কিছু নেই, জীবনের শেষ পর্যন্ত নয়। কারণ আমার কাছে এখন 121 বছর 3 মাস মতো আছে। ততদিন তো আর আপনি থাকবেন না!! Sorry, মজা করলাম। দোয়া করব- আপনি যেন এখনও 122 বছর বাঁচেন এবং আমার জানাজায় সামিল হন!!
পাঠক জানেন, আমি আমার কাফনের কাপড়ের জন্য টাকা জোগাড় করছি!! এখন পর্যন্ত মাত্র ₹ 200/- টাকা জোগাড় করতে পেরেছি আমার প্রেম নগর অর্থাৎ শেওড়াবেড়িয়ার মামা রাফিউদ্দিন এর মাধ্যমে, এখনও ₹ 400-500/- টাকা জোগাড় করতে হবে!! যাইহোক, এ বিষয়ে বাকি কাহিনীটা অন্য একদিন শোনাব- ইনশা আল্লাহ। এখন উত্তরের আনন্দ নিন-
1) প্রশ্ন হবে- উল্কা তথা ধূমকেতু ও গ্ৰহাণু সম্পর্কে আর কোনও তথ্য কোরানে আছে?? কোথায় আছে?? আর বছরে কত পরিমাণ মতো উল্কাপাত হয় এবং উল্কার আঘাতে কোনও মানুষ মরে?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- 17:68 ও 67:17 তে উল্কা সম্পর্কে বলা আছে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ও অন্যান্য Reference/ ব্যাখ্যার জন্য নিচের Link এ Click করুন-
https://m.facebook.com/
হ্যাঁ, উল্কার আঘাতে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী মারা যেতে পারে। মানুষের মাথায় যদি 200 Gram ওজনের উল্কা আঘাত করে, তাহলেই মানুষ মারা যেতে পারে। রইল কথা, বছরে কত পরিমাণ উল্কাপাত হয়?? এ প্রশ্নের উত্তর হল- গড়ে 1500 metric ton অর্থাৎ 1500 × 1000 = 15, 000, 00 Kg অর্থাৎ 15 লক্ষ Kg.
2) প্রশ্ন হবে- শুধু আপনার অনুবাদ সঠিক, অন্য সবার অনুবাদ ভুল, এটা কিভাবে মেনে নেব?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- আমি তো প্রমাণ ছাড়া অযৌক্তিক কোনও কিছু প্রস্তাব করি নি, পরিপূর্ণ বিশ্লেষণ করেছি। আপনি আপনার বিচার-বুদ্ধির ব্যবহার করুন। তারপরও যদি আপনার মনে হয়, আমি ভুল কোনও প্রস্তাব করেছি, তা হলে- আমার প্রস্তাব মানতে হবে না কিন্তু আমি বিচার দিনে দায় মুক্ত থাকব!! কেননা, আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি (5:92, 64:12)।
3) প্রশ্ন হবে- আপনি এমন ভাবে লেখেন, যেন আপনিই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পন্ডিত!! আপনি কি অহংকারী নন?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- হ্যাঁ, আমি মুসলিম, এটা আমার অহংকার, এ জন্য আমি অহংকারী!! আপনি কি মুসলিম হয়ে লজ্জিত?? আর রইল কথা, আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পন্ডিত কি না!! এ প্রশ্নের উত্তরও সহজ- না, আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় তো দূরের কথা, সবচেয়ে ছোট পন্ডিতও নই, আমি শুধুমাত্র হোসেন কুরানী!!
যেহেতু অহংকারের কথা বললেন, সেহেতু আপনার জানা উচিৎ যে, আমি অনেক বড় অহংকারী, আর এই অহংকার আমি করতেই থাকব- আমি হোসেন কুরানী, একজন মুসলিম এবং মুসলিম না হারতে পারে, না মরতে পারে, মুসলিম শুধুমাত্র জিততে পারে!!
4) প্রশ্ন হবে- আপনি আলিম তো নন, তাহলে আপনার পরিচয় কি?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- আমার সম্পর্কে আল্লাহ পবিত্র কোরানে কি বলেছেন, তা আপনাকে দেখাতে চাই- وَمَنْ يُؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا অনু বাদ হবে এমন-"যাকে বিজ্ঞানের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে, তাকে বিরাট কল্যাণ দেওয়া হয়েছে"(2:279)। আর কি কিছু বলব??
যাইহোক, যদি আপনি আমার কোরান এবং বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন লেখা পড়তে চান, তাহলে নিচের Link এ click করুন---
https://m.facebook.com/
5) প্রশ্ন হবে- বাজারে এত বঙ্গানুবাদ কোরান থাকতে আপনার অনুবাদ 'বিজ্ঞানের বিজ্ঞান আল-কোরান' কি জান্য প্রয়োজন?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- এই লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন, তাহলেই বুঝে যাবেন- ইনশাআল্লাহ!!
6) প্রশ্ন হবে- আপনার অনুবাদকৃত বঙ্গানুবাদ কোরানে বিশেষ কি থাকবে?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- এই লেখাটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন, তাহলে ভাল ভাবে বুঝতে পারবেন- আমাদের 'বিজ্ঞানের বিজ্ঞান আল কোরান' কেমন হবে- ইনশাআল্লাহ!!
7) প্রশ্ন হবে- আমরা আপনার লেখার জন্য অপেক্ষা করি কিন্তু আপনি আর আগের মতো লেখা-লেখি করেন না কেন?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- আসলে আগে যে সব লেখা গুলো লিখেছি, সেগুলোর সংস্করণ নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছি। তাই আর নতুন লেখা প্রকাশ করতে পারি নি। এছাড়াও আগের চেয়ে পড়া-শোনায় সময় অনেক বেশি খরচ করছি, প্রতিদিন মোটামুটি 16-18 ঘন্টা!!
আর হ্যাঁ, আমার লেখা পড়ার জন্যেও কেউ অপেক্ষা করে, এটা ভাবি নি!! আসলে আমার জন্য তো কেউ অপেক্ষা করে না, সবাই আমাকে ফেলে রেখে চলে যায়। জীবনে 2 জনকে অনেক বেশি ভালবেসেছি কিন্তু 2 জনই আমাকে রেখে চলে গেছে!! প্রথম জন ছিলেন- আমার মা, দ্বিতীয় জন ছিলেন- আমার সব!!
8) প্রশ্ন হবে- আপনি প্রেম করেছেন, আপনি কি ইসলাম বহির্ভূত কাজ করেন নি?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- আমি কখনও ইসলাম বহির্ভূত কাজ করি না, জ্ঞানের পরিধি কম হওয়ায় আমরা বিবাহপূর্ব প্রেমকে ইসলাম বহির্ভূত ভাবি!! আর একটা কথা- বিবাহপূর্ব প্রেমে গুনাহ তো হয়ই না, উপরন্তু নেকী হতে পারে, যদি পদ্ধতিটা সঠিক হয়!! এখন যদি বলতে যাই, তাহলে অনেক সময় লাগবে
9) প্রশ্ন হবে- আপনার অনেক কথা ইসলামের বিরুদ্ধে যায়, এটা কি মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা গ্ৰহণ না করার ফল নয়?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- এই লেখাটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার পর কিভাবে আপনার মনে এই কথা এল যে, আমার মাদ্রাসায় পড়ার প্রয়োজন ছিল??
হ্যাঁ, মনে হতে পারে যে, হোসেন কুরানীর এই কথাটা ইসলাম বিরোধী কিন্তু বাস্তবে আমার কোনও কথা কখনও كتاب الله ও رسول الله 'র বিপক্ষে যায় না!! হতে পারে- আপনি যাকে 'ইসলাম' বলে মনে করছেন, সেই 'মনে হওয়া ইসলামের' বিপক্ষে আমার কথা যেতে পারে। তবে কখনও كتاب الله ও رسول الله 'র বিপক্ষে যায় না!! আর যদি কখনও আমার কোনও কথা كتاب الله ও رسول الله 'র বিপক্ষে যায়, তাহলে আমার ঐ কথায় আপনি 'দাঁড়িয়ে প্রসাব' করে দিন!!
10) প্রশ্ন হবে- আপনি কি নতুন কোনও মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন?? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ- আমি জান্নাত চাই, জাহান্নাম নয়!! আর হ্যাঁ, আমি পাগল না হওয়ার ওষুধ খাচ্ছি, তাই পাগল নয়!!
তবে যদি কখনও সুযোগ হয়, তাহলে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, তখন আপনি আমার শত্রু হলেও, একমত হবেন আমার সঙ্গে এবং তখন আপনার মনে হবে- উনি শুধুমাত্র হোসেন নয় বরং হোসেন কুরানী এবং উনি ঠিকই বলেন- আমি হোসেন কুরানী, একজন মুসলিম এবং মুসলিম না হারতে পারে, না মরতে পারে, মুসলিম শুধুমাত্র জিততে পারে!!
আশা করছি, বোঝাতে পারলাম এবং আরও কঠিন কঠিন প্রশ্ন থাকলে, পাঠান- ইনশাআল্লাহ, চেষ্টা করব সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার।
আরো নতুন নতুন সিম অফার, টিপস ও নিউজ পেতে সাথেই থাকুন।
ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে সাইট শেয়ার করুন ।
0 Comments