আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও মহান আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
আজকে আমি একটি ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্প নিয়ে এসেছি। শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।মুসলমানদের জন্য এটি একটি অতি শিক্ষানীয় গল্প।
এক মাদ্রাসার ছাত্র তার হুজুরকে প্রশ্ন করল,"হুজুর, হাশরের দিন বান্দার হিসাব - নিকাশ কেমন হবে"?
ছাএের কথা শুনে হুজুর কিছুক্ষন বসে থাকলেন, তারপর নিজের পকেট থেকে কিছু টাকা বের করলেন। সেই টাকা ছাত্রদের মাঝে বন্টন করে দিলেন। ১ ম জনকে ১০০ টাকা, ২ য় জনকে ৭৫ টাকা, ৩ য় জনকে ৫০ টাকা,৪ থ জনকে ২৫ টাকা,৫ ম জনকে ১০ টাকা,৬ ষ্ঠ জনকে ৫ টাকা এবং প্রশ্নকারী ছাত্রকে দিলেন ১ টাকা।
প্রশ্নকারী ছাত্র মাত্র এক টাকা পাওয়ার পর মন খারাপ হয়ে গেল।হুজুরের এমন অসম বণ্টনে সে ভীষণ কষ্ট পেল।মনে মনে ভাবল সে গরিব বলে, তার গায়ের জামায় অনেক কালি বলে, সবাই যেমন তাকে কটাক্ষ্য করে, হয়তো হুজুর ও সেজন্য অন্যদের যেখানে ১০০/৭৫ টাকা দেওয়া হলো, সেখানে তাকে মাএ ১ টাকা দিলেন, সে মনে মনে ভাবল হুজুর এভাবে আমাকে কেন অপমান করল?
এদিকে হুজুর টাকা বন্টন শেষে সেই ছাত্রের মন খারাপের বিষয়টা টের পেলেন।তিনি সব ছাত্রদের মাঝে মুসকি হেসে বললেন , আজ তোমাদের ছুটি।তোমাদের যেই টাকা দেওয়া হলো সেটা পুরোপুরি খরচ করবে এবং আগামী সপ্তাহের বন্ধের দিন মাদ্রাসার রান্না ঘরে সকাল ১০ ঘটিকায় তোমরা সবাই উপস্থিত হবে।কারন তোমাদের এই টাকার হিসাব নেওয়া হবে।
হিসাব কিন্তু দিতে হবে।সপ্তাহিক বন্ধের দিন ছাত্ররা সেখানে উপস্থিত হল।হুজুর আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন। হুজুর সবাইকে উপস্থিত দেখে খুশি হলেন,সবাই আসার পর হুজুর বললেন - তোমরা একজন করে এই উউত্তপ্ত কড়াইয়ে উপর দাঁড়িয়ে আমার টাকার হিসাব দাও।কে কোথায় কত টাকা খরচ করেছো তার হিসাব দাও।
ছাত্ররা ভয় পেয়ে গেলে হুজুর বললেন- ভয় পেয়ো না এই কড়াইটি উত্তপ্ত একেবারে তোমাদের পা পুড়ে যাবে না।তবে যথেষ্ঠ গরম লাগবে। প্রথমেই এগিয়ে এল সেই ছাত্র যাকে ১০০ টাকা দেওয়া হয়েছিল। সে কড়াইয়ে দাড়ানোর পর হুজুর তাকে প্রশ্ন করলেন, আমার দেওয়া টাকা তুমি কিভাবে খরচ করছো তার হিসাব দাও।
এমনিতেই আগুনের উত্তপ্ত তাওয়া, তার উপর খালি পা।ছাএ এক পা নামায় আরেক পা তোলে।এভাবে অনেক কষ্টে অনেক কষ্টে তাওয়ায় দাঁড়িয়ে হিসাব দিতে লাগলো, হুজুর আমি ১০ টাকায় চকলেট কিনেছি, ২০ টাকায় চিপস, এভাবে অনেক কষ্ট সহ্য করে সে হিসাব দিল।তারপর এলো সেই ছাত্র যাকে ৭৫ টাকা দেওয়া হয়েছিল।
এভাবে পর্যায় ক্রমে সবাই উত্তপ্ত কড়াইয়ের উপরে দাঁড়িয়ে টাকার হিসাব দিল। সবার শেষে সেই ছাএ হিসাব দিল যাকে ১ টাকা দেওয়া হয়েছিল।সে হাসি মুখে তাওয়াতে একপা দেওয়ার সাথে সাথে ই বলে ফেলল - হুজুর ১ টাকা দিয়ে একটা চকলেট কিনেছি।
হিসেব দিয়ে হুজুরের সামনে এসে দাড়াল সে,বাকিরা যখন পোড়া পায়ে পানি ঢলছে তখন সে হাসছে।
তখন হুজুর হেসে বললেন- এই হলো হাশরের মাঠের হিসাবের একটি নমুনা , যার ক্ষমতা ও সম্পদ যতবেশি তার হিসাব ও তত বেশি।যার ক্ষমতা ও সম্পদও যত কম তার হিসাব ও তত কম।
তো আজকে এই পর্যন্তই।আশা করি আপনাদের কাছে পোস্টটি ভালো লেগেছে।
Post a Comment